শুক্রবার, ২৬ জুন, ২০১৫

যার যা ধর্ম: (বাংলা ভাষায় প্রথম ধর্ম অভিধান) - মুহাম্মদ হাবিবুর রহমান

cover1বিশ্বের অন্যান্য ভাষায় নির্দিষ্ট বিষয়ভিত্তিক অভিধানের ছড়াছড়ি। সেদিক থেকে বাংলা ভাষা বলতে গেলে অনেক ক্ষেত্রেই পিছিয়ে। অবশ্য, ক্রমেই তাঁর এসব খামতি পূরণ হওয়ার পথে। এর সর্বশেষ দৃষ্টান্ত মুহাম্মদ হাবিবুর রহমান প্রণীত যার যা ধর্ম: বাংলা ভাষায় প্রথম ধর্ম অভিধান। এই অভিধানের পরিমার্জিত ও পরিবর্ধিত সংস্করণের কাজ যখন শুরু হয়, তাঁর সঙ্গে সম্পৃক্ততার সুযোগ পেয়ে আমাদের যথেষ্ট খুশি হওয়ার কারণ ঘটেছিল। প্রথমত, হাবিবুর রহমানের উদ্যমশীলতা, এই অভিধানে কোনো প্রয়োজনীয় ভুক্তি বাদ পড়ল কি না, সে বিষয়ে তাঁর উৎকণ্ঠা এবং তা নির্ভুলভাবে সংযোজন করার ব্যাপারে তাঁর আন্তরিক প্রয়াস আমাদের মুগ্ধ করেছে প্রতিনিয়ত। প্রগাঢ় করেছে তাঁর প্রতি আমাদের শ্রদ্ধাবোধকে। এ কথা সুবিদিত যে ভাষা-সংক্রান্ত সাধারণ অভিধান যেমন, তেমনি নির্দিষ্ট বিষয়ভিত্তিক অভিধানও একবারে সম্পূর্ণ হয় না। হওয়াটা অসম্ভব। পাশ্চাত্য থেকে প্রকাশিত ধর্মবিষয়ক একাধিক প্রকাশনীর একাধিক অভিধান দেখার সুযোগ আমার হয়েছে। সেসব অভিধানের একজন প্রণেতা-প্রধান আছেন এবং তাঁকে সহায়তা করার জন্য একটা সম্পাদকীয় প্যানেল বা বোর্ড আছে। কিন্তু বিস্ময়কর ব্যাপার এই যে যার যা ধর্ম নামের এই অভিধানে প্রায় দুই হাজার ছোট-বড় যেসব ভুক্তি আছে, সেসবের লেখক, অনুবাদক ও সম্পাদক একজনই—মুহাম্মদ হাবিবুর রহমান। কী পাহাড়সমান প্রয়াস তাঁর! বর্ণানুক্রমিকভাবে বিন্যস্ত এই অভিধানের ভুক্তিসূচির দিকে একবার আদ্যোপান্ত চোখ বোলালেই পাঠকের কাছে স্পষ্ট হয়ে যাবে, এই অভিধানের তাৎপর্য কোথায়? বিশ্বের প্রধান প্রধান ধর্ম তো বটেই, অভিধানে গৌণ থেকে গৌণতর ধর্মেরও প্রায় কোনো বিষয়ই বাদ যায়নি। পবিত্র ইসলাম ধর্মের প্রত্যেক নবী ও খলিফাদের পরিচয় যেমন যথাসাধ্য দেওয়া আছে, তেমনি এই ধর্মের ক্রমবিকাশের ইতিহাস, তার গুরুত্ব, ইহ ও পরলোকের বিবরণ, নামাজ, রোজা এবং পালনীয় কৃত্যাদি, দোয়াদরুদ, পবিত্র ধর্মীয় স্থানগুলোর পরিচয়ও পৃথক পৃথক ভুক্তির মাধ্যমে তুলে ধরা হয়েছে। শুধু তা-ই নয়, ইসলামধর্মের অনুসারী সংস্কারক, সমাজসেবী ও সমাজকল্যাণমূলক প্রতিষ্ঠানগুলোর পরিচয়ও তুলে ধরা হয়েছে একইভাবে। হিন্দু, বৌদ্ধ, জৈন, খ্রিষ্টান, শিখ ও নানা লোকধর্মের পরিচয়, তাদের বিবর্তনের ইতিহাস, ধর্মীয় লোকাচার, তাদের কৃত্যাদি এবং মূর্তিপূজক ধর্মগুলোর দেবদেবীদের পরিচয়ও তুলে ধরা হয়েছে যথাসম্ভব বিশ্বস্ততার সঙ্গে। আছে গ্রিক ও রোমক পুরাণের দেব-দেবীদের কথা, বিশ্বের নানা ধর্মের স্মরণীয় ঘটনাসম্পৃক্ত দিবসগুলোর বিবরণ। আছে বিশ্বের সব ধর্মের উল্লেখযোগ্য প্রচারক ও সংস্কারকদের জীবনী। বাদ যায়নি বিশ্বের সব ধর্মের তীর্থস্থানগুলোর বিবরণসংবলিত পরিচিতিও। নানা ধর্মে প্রচলিত সংস্কার বা কুসংস্কারের বিবরণও মিলবে এই গ্রন্থের সুবাদে, ভুক্তির পর ভুক্তি থেকে। বস্তুত, বিশ্বের প্রতিটি ধর্ম সম্পর্কে আমাদের জ্ঞানের পরিধি যতই বাড়বে, আমরা দেখব, আমাদের মন ও মননের দিগন্ত তত বেশি প্রসারিত হচ্ছে, আলোকিত হচ্ছে। মন থেকে উপড়ে ফেলছি ধর্মীয় কূপমণ্ডূকতা। এবং দেখছি, বিশ্বের সব ধর্মেরই এক সুর—মানবজাতির কল্যাণ, মানবজাতির মঙ্গলসাধন। এই বিচারে, যার যা ধর্ম অভিধানের আদ্যন্তপাঠ খুবই জরুরি এবং এর সংগ্রহ শিথানসঙ্গ করা আরও বেশি আবশ্যক।

ডাউনলোড করুন

Tags: ,

0 Responses to “যার যা ধর্ম: (বাংলা ভাষায় প্রথম ধর্ম অভিধান) - মুহাম্মদ হাবিবুর রহমান”

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

Contact

Subscribe

Donec sed odio dui. Duis mollis, est non commodo luctus, nisi erat porttitor ligula, eget lacinia odio. Duis mollis

© 2013 Ebook Craver. All rights reserved.
Designed by SpicyTricks